ভুমি ক্রয় বিক্রয় এর পূর্বে এই তথ্য আপনার জানা দরকার।

জমি নিয়ে আমাদের মাঝে ভাবনা চিন্তা শেষ নেই, কোথায় কীভাবে কাগজ পাবো কি কি কাগজ দরকার হয়। জমি কিনতে সব কিছুর সমাধান পাবেন এই খানে তাই সুন্দর ভাবে মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। 
জমির এই উল্লেখযোগ্য ডকুমেন্ট!
  • ১. পর্চা বা খতিয়ান। 
  • ২. দলিল। 
  • ৩. ম্যাপ বা নকশা।
এই কাগজ ছাড়া আপনি জমি বিক্রয় বা হস্তান্তর অথবা ব্যাংক লোক বা যেকোন প্রতিষ্ঠান যারা জমি সংক্রান্ত দললি চায়, ইত্যাদি কাজ করতে পারবেন না বরং নানান সমস্যার সম্মুখীন হবেন। তাই আপনার জমির এই কাগজ গুলো সর্বদা সংগ্রহে রাখুন। 

জমির খতিয়ান, দলিলসহ সকল কাগজপত্র সংগ্রহে রাখার জন্য সরকারি নানান দপ্তর রয়েছে, যারা ভূমি সংক্রান্ত কাগজপত্র সংগ্রহ করে রাখে আপনি ঐ সকল দপ্তরগুলোকে চিহ্নিত করে উক্ত দপ্তরে সংরক্ষিত থাকা কাগজপত্র গুলো সংগ্রহ করুন।এবিষয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো, কোথায়, কীভাবে এবং কত সময়ের ভেতরে আপনি জমির খতিয়ান, দলিল ও নকশা সংগ্রহ করবেন।

আপনার জমির খতিয়ান বা পর্চা কোথায় পাবেন ?

জমির পর্চা বা খতিয়ান মূলত চারটি অফিসে পাবেন। তা হলো,
  • ১.ইউনিয়ন ভূমি অফিস।
  • ২.উপজেলা ভূমি অফিস।
  • ৩.জেলা ডিসি অফিস।
  • ৪.সেটেলমেন্ট অফিস।
ইউনিয়ন ভূমি অফিস বা তহশিল অফিস। ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যদিও খতিয়ান বা পর্চার বালাম বহি থাকে কিন্তু আপনি এই অফিসে হতে খতিয়ানের কপি নিতে পারবেন না। ইউনিয়ন ভূমি অফিস হতে শুধু খসরা খতিয়ান নিতে পারবেন যেটা আইনত কোন মূল্য নেই তারপরেও এই অফিসটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ আপনার জমির খতিয়ান নাম্বার জানা না থাকলে এই অফিস থেকে জেনে নিতে পারবেন এছাড়া জমির খাজনা বা ভূমি উন্নয়ন কর এই অফিসে দিতে হয়।

উপজেলা ভূমি অফিসযদিও উপজেলা ভূমি অফিসের মূল কাজ নামজারী বা খারিজ বা মিউটেশন করা তবে খসরা খতিয়ান তুলতে পারবেন। এই অফিস হতেও খতিয়ানের সার্টিফাইড পর্চা বা কোর্ট পর্চা তুলতে পারবেন না।

জেলা ডিসি অফিস এই অফিস হতে পর্চা বা খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি সংরক্ষণ করতে পারবেন। এই অফিসের খতিয়ান এর গুরুত্ব সর্বাধিক। সব জায়গায় এই অফিসের খতিয়ান এর গুরুত্ব রয়েছে।

সেটেলমেন্ট অফিস শুধুমাত্র নতুন রেকর্ড বা জরিপের পর্চা / খতিয়ান এই অফিস হতে সংগ্রহ করা যাবে। পাশাপাশি নতুন রেকর্ড এর ম্যাপ ও সংগ্রহ করা যায়।

প্রশ্নঃ খতিয়ান তুলতে কত টাকা লাগবে ?

উত্তরঃ সি এস, এস এ, আর এস, এর জন্য কত টাকা দিতে হবে তা নির্ভর করে ঐ স্থানের সিন্ডিকেটের উপর। তবে সিটি জরিপের জন্য ১০০ টাকা খরচ হবে।

প্রশ্নঃ আপনার জমির দলিল বা বায়া দলিল কোথায় পাবেন?

উত্তরঃ দলিল বা দলিল এর সার্টিফাইড কপি বা নকল মূলত দুটি অফিস হতে সংগ্রহ করা যায়, তা হলো।
  • ১. উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস।
  • ২. জেলা রেজিস্ট্রি বা সদর রেকর্ড রুম অফিস।
উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস
যেখানে নতুন দলিল রেজিস্ট্রেশন করা হয় এই অফিস হতে নতুন দলিলের নকল ও মূল দলিল পাওয়া যায়। কিন্তু পুরাতন দলিল বা বায়া দলিল এই অফিসে পাওয়া যায় না।

জেলা রেজিস্ট্রি অফিস বা সদর রেকর্ড রুম। এই অফিসে নতুন বা পুরাতন দলিলের সার্টিফাইড কপি বা নকল পাওয়া যায়। 

প্রশ্নঃ দলিল তুলতে কত টাকা খরচ হয়?

উত্তরঃ সরকারি খরচ যদিও সামান্য কিন্তু নকলের খরচ নির্ভর করে ঐ স্থানের সিন্ডিকেটের উপর।

প্রশ্নঃ আপনার জমির মৌজা ম্যাপ বা নকশা কোথায় পাবেন?

সাধারণত ম্যাপ বা নকশা দুইটি অফিসে পাবেন, তা হলো
  • ১. জেলা ডিসি অফিস
  • ২. ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর (DLR) অফিস, ঢাকা।
জেলা ডিসি অফিস: এই অফিস হতে সিএস, এসএ, আরএস, বিএস যেকোনো মৌজা ম্যাপ সংগ্রহ করা যাবে। সংগ্রহ করতে যা লাগবে আবেদন ফরম সাথে ২০ টাকার কোর্ট ফি এবং ৫০০ টাকা নগদ জমা বাবদ বা ডি.সি.আর বাবদ। অর্থাৎ ৫৩০ টাকায় মৌজা ম্যাপ তুলতে পারবেন।

ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর, (তেজগাঁও সাতরাস্তার মোড়), ঢাকা।
সারা বাংলাদেশের যে কোনো মৌজা ম্যাপ সিএস, এসএ, আরএস, বিএস, জেলা ম্যাপ, বাংলাদেশ ম্যাপ উক্ত অফিস হতে তুলতে পারবেন। এই অফিসের ম্যাপের গ্রহণযোগ্যতা ও অনেক বেশি। সারা বাংলাদেশের যে কোন ম্যাপ এই অফিসে পাওয়া যায়। ম্যাপ তুলতে খরচ আবেদন ফরম সাথে কোর্ট ফি ও ডি.সি.আর মোট= ৫৫০/= টাকা মাত্র।

আপনারা যারা জমি বিক্রয় বা ক্রয় করবেন তাদের সকলের এই সব বিষয় জেনে রাখা উচিৎ। এবং জমি ক্রয় এর সময় একটু হাতে সময় নিয়ে উক্ত খতিয়ান নাম্বার ও সার্স করে দেখে নেয়া ভালো যে উক্ত জমি আগে বক্রিত কিনা। জমি ক্রয় ও বিক্রয়ে সাবধান হোন। ভূমি বা জমির সকল সমস্যার জন্য নিচের সরকারি সাইটটিতে সমাধান রয়েছে অথবা ভূমি হেল্পলাইন নাম্বার দেওয়া আছে কল করতে পারেন।
Link: https://land.gov.bd/
(১৬১২২) হটলাইন